নতুন স্মার্টফোন কেনার কথা ভাবছেন। কিন্তু বুঝে উঠতে পারছেন না অল্প বাজেটের মধ্যে কোন স্মার্টফোনটি কিনবেন? বাংলাদেশী স্মার্টফোন ব্র্যান্ড গুলোর মধ্যে ওয়ালটন প্রতিনিয়তই নতুন নতুন স্মার্টফোন বাজারে এনে চমক সৃষ্টি করছে। ওয়ালটনের অল্প বাজেটের কিছু মোবাইলের মধ্যে ওয়ালটন প্রিমো জিএফ৪ ডিভাইসটি যথেস্ট উন্নতমানের ও গুনগত মান সম্পু্র্ন। চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক ওয়ালটন প্রিমো জিএফ৪ সম্পর্কে।
ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ ডিভাইসটির বডি সম্পু্র্ন প্লাস্টিক বিল্ডের। সেটটির চারপাশে সাইডে একটি স্টিল ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়েছে যা ডিভাইসটিকে দেখতে আরও আকষনীয় করে তুলেছে। ডিভাইসটি মাঝারি সাইজের হওয়ায়, এই ডিভাইসটি অনায়েসেই এক হাতে দিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ স্মার্টফোনটি মাঝারি সাইজের যার দৈঘ্য ১৩৬ মিলিমিটার, প্রস্থ ৬৬.৩ মিলিমিটার। এছারা ব্যাটারি সহ মোবাইলটির ওজনমাত্র ১২৯ গ্রাম।
ডান পাশে ভলিয়ম রকার এবং পাওয়ার বাটন রয়েছে। এর বাম পাশটি ফাকা রাখা হয়েছে। ব্যাক প্যানেলের উপরের দিকে বামে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সাথে এলইডি ফ্ল্যাস। নিচের দিকে লাউড স্পিকিার। ফ্রন্ট প্যানেলের উপরের দিকে রয়েছে ফ্রান্ট ফেসিং ফ্ল্যাস, এ্যারপিস, ২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ফেসিং ক্যামেরা। নিচের দিকে তিনটি টাচ ক্যাপাসিটিভ বাটনস। মোবাইল ফোনটির একদম উপরের দিকে রয়েছে ৩.৫ মিলিমিটার অডিও পোর্ট, সাথে রয়েছে মাইক্রোইউএসবি পোর্ট।
ওয়ালটনের বেশীরভাগ ডিভাইসের মত এই ডিভাইসেও ডুয়েল সিম ব্যবহার করতে পারবেন। মোবাইলটির ব্যাকপাট খুললেই দেখতে পাবেন ডিভাইসটিতে একটি নরমাল সিম কার্ড স্লট ও একটি মাইক্রো সিম কার্ড স্লট রয়েছে। আরও রয়েছে এসডি কার্ড স্লট, যা ৩২ জিবি মেমোরি পর্যন্ত সাপোর্ট করে।
চলুন দেখে নেয়া যাক, স্মার্টফোনটি কিনলে এর সাথে আপনারা কি কি পাবেনঃ
- ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ ডিভাইস
- চারজিং এডাপটার
- ডাটা কেবল
- হেড ফোন
- স্ক্রীন প্রটেক্টর
- ইউজার মেনুয়াল গাইড
- ওয়ারেন্টি কার্ড
ডিসপ্লে এবং টাচ
এ ডিভাইসটিতে এফ ডাবলু ভিজিএ ডিসপ্লে ব্যাবহার করা হয়েছে। এর ৪.৫” ডিসপ্লেতে আপনারা (৮৫৪ x ৪৮০) পিক্সেলের ভিডিও দেখতে পারবেন।আর এই মোবাইলের ডিসপ্লেতে ২ আঙ্গুল পযর্ন্ত মাল্টিটিাচ সাপোট করে।
অপারেটিং সিস্টেম
মোবাইলটিতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে পাবেন অ্যান্ড্রয়েড ৫.১ ললিপপ ভার্সন। এতো কম বাজেটের স্মার্টফোন গুলোতে সাধারনত অ্যান্ড্রয়েডের লেটেস্ট ভার্সন ৫.১ ললিপপ করতে দেখা যায় না। জিএফ৪ ডিভাইসটির অ্যাপডয়ার অন্য সব ডিভাইসের মতই, তেমন কোন পরিবর্তন নেই। আর ট্রানজেশনে তেমন কোন লেক আমার কাছে মনে হয়নি। এর নোটিফিকেশন প্যানেলটি পুরোপুরি স্টোক অ্যান্ড্রয়েডের মতই। এর ডিসপ্লের সার্পনেস ভালো হওয়ায় যে কোন কিছু ব্রাউজ করে লেখাগুলো খুব ভালোভাবে পড়তে পারবেন।
রোম ও র্যাম
এই মোবাইলে রয়েছে ১ গিগাবাইট র্যাম এবং ৮ গিগাবাইট রোম। প্রয়োজন অনুয়ায়ী মেমরি কার্ড ব্যবহার করার সুবিধা আছে সর্বোচ্চ ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত।
জিপিউ
ওয়ালটনের মধ্যম বাজেটের স্মার্টফোন গুলোর মত এই স্মার্টফোন জিপিউ ব্যবহার করা হয়েছে মালি ৪০০।
পারফরমেন্স
প্রথমেই বলে রাখি, ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ ডিভাইসটি একেবারেই সীমিত বাজেটের একটি স্মার্টফোন। তারপরও পারফরমেন্স যথেষ্ট ভালো।
ক্যামেরা
ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ এর অন্যতম ভালো দিক হল এর ক্যামেরা। এতে আছে বি এস আই ৫ মেগাপিকক্সেল অটোফোকাস রেয়ার ক্যামেরা যার কারনে লোলাইটেও ভালো ছবি তোলা যাবে। ফ্রন্টে রয়েছে ডিএইচএস সেস্নরযুক্ত ২ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস ক্যামেরা। যা এই প্রথম বারের মত কোন লো বাজেটের মোবাইলে দেয়া হয়েছে। অল্প বাজেটেরে মোবাইল হিসেবে এর ক্যামেরায় তোলা ছবি গুলোর সার্পনেস ও কালার টোন গুলো অনেক ভাল। মোবাইলটির সেটিংস অপসনে গিয়ে আপনি আপনার পছন্দমত মুড পরিবতন করে ছবি তুলতে পারেন।
ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ দিয়ে তোলা কিছু ছবিঃ
গেমিং
এই বাজেটের মধ্যে যে সব মোবাইল গুলো রয়েছে সচরাচর এসব মোবাইল গুলোর মধ্যে হাই রেফিনেশনের গেমসগুলো খেলতে গেলে অনেক ধরনের লেকিং দেখা যায় কিন্তু এই ফোনের তেমন ল্যাগিং ধরা পরেনি। এই মোবাইলটিতে আমি যে গেমস্ গুলো খেলেছি সব গেমস্ গুলো অল্প কিছু ল্যাগিং ছাড়াই চলেছে।
ওটিজি
ডিভাইসটি ওটিজি সাপোটের্ড হওয়ায় এর মধ্যে আপনি জয়েসটিক ব্যবহার করে খেলতে পারবেন। শুধু জয়েসটিক নয় পেনড্রাইভ, মাউস থেকে শরু করে যে কোন ধরনের ইউসবি এক্সাসারিস ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এই মোবাইরটির সাথে আপনাকে কোন ওটিজি ক্যাবল দেয়া হবে না। বাজার থেকে কিনে ব্যবহার করতে হবে।
স্পেস্যাল ফিচার
এই স্মার্টফোনটিতে এ্যন্টি থেফ্ট প্রযুক্তি রয়েছে যার দ্বারা আপনার মোবাইলটি হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে ফিরে পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
ব্যাটারি ব্যাকাপ
ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ মোবাইলটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৮০০ mAh লিথিয়াম আইওন ব্যাটারি। এই মোবাইলের ব্যাটারি ব্যাকাপ যথেষ্ট ভালো বলে মনে করছি এছারাও কেউ যদি চায় এই ডিভাইসটির পাওয়ার সেভার অপসন চালু করে ব্যাটারি ব্যাকাপ আরও বাড়িয়ে নিতে পারেন। সেটটি নরমালভাবে ব্যবহার করলে একদিন, অন স্ক্রিনে বসে গেমস খেললে বা নেট ব্যবহার করলে মোটামুটি ৪ থেকে ৫ ঘন্টা ব্যাকাপ পাওয়া যাবে।
দূর্বলতা
সত্যি বলতে এই ডিভাইসটিতে তেমন কোন লেকিং খুজে পাওয়া যায়নি। অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে যে মোবাইলটিতে কি কোন ধরনের লেকিং নেই? তাদের জন্য আমি বলবো অল্প দামের মধ্যে আপনারা যাযা পাচ্ছেন এই মোবাইলটিতে তা অন্যান্য মোবাইলের তুলনায় এক কথায় অনেক ভালো।
দাম
ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ দাম নিধারন করা হয়েছে ৬,১৯০ টাকা। বন্ধুরা মোবাইলটির লুকস কনফিগারেশন ও গুনগত মানের কথা চিন্তা করলে এত কম বাজেটে এমন ভালো সেট পাওয়া দূরহ ব্যাপার।
মতামত
ওয়ালটন প্রিমো জিএফ ৪ মোবাইলটি এক কথায় যথেষ্ট ভালো। যদি কেউ বাজেটের কথা চিন্তা করে এবং অল্প বাজেটে একটি ভালো হ্যান্ড সেট পেতে চায় তাহলে ওয়ালটন প্রিমো জি এফ ৪ মোবাইলটি যে কারোও জন্য হতে পারে একটি স্টাইলিশ যুগ উপযোগী মোবাইল।
No comments:
Post a Comment