বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ওয়ালটনের পন্য তার গুনগতমান ও প্রযুক্তির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে। সাশ্রয়ী মূল্য, সহজ কিস্তি এবং গুনগত মান সঠিক বলে ওয়ালটনের পন্য গুলো খুব সহজেই বাজারে বিপুল চাহিদা সৃষ্টি করতে পেরেছে। আর বর্তমানে একের পর এক মোবাইল বের করছে ওয়ালটন। যার উন্নত প্রযুক্তি, গোরজিয়াস লুক, কনফিগারেশন ও ক্যামেরা সকলকেই আকৃষ্ট করছে। সাম্পতিক ওয়ালটন এবার বাজারে নিয়ে এলো ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪। সীমিত বাজেটের এই স্মার্টফোনটির লুক আপনার দেখা মাত্রই পছন্দ হবে। বলতে গেলে, মোবাইলটি এলিগেন্ট লুকই ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আর সীমিত বাজেটের এই স্মার্টফোনটির ক্যামেরাও কিন্ত চমৎকার। তারপরও মোবাইলটি কেন এত জনপ্রিয় তা পুরো রিভিউ পড়লে বুঝতে পারবেন। বিস্তারিত আলোচনার আগে চলুন দেখে নেওয়া যাক স্মার্টফোনটির কনফিগারেশনঃ
অপারেটিং সিস্টেম | অ্যান্ড্রয়েড ৫.১ ললিপপ |
ডিসপ্লে | ৫ ইঞ্চির আইপিএস |
প্রসেসর | ১.৩ গিগাহার্টজ কোয়াড কোর প্রসেসর |
র্যাম | ১ গিগাবাইটের র্যাম |
রোম | ৮ গিগাবাইটের রোম |
জিপিউ | মালি ৪০০ জিপিউ |
রিয়ার ক্যামেরা | ৮ মেগাপিক্সেল |
ফ্রন্ট ক্যামেরা | ২ মেগাপিক্সেল |
ইন্টারনাল মেমোরী | ৮ গিগাবাইটের |
সিম সাপোর্ট | ডুয়েল সিম |
ব্যাটারি | ২,০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি |
আনবক্সিং
ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪ ডিভাইসটির বক্স এ পাবেনঃ
- প্রিমো এইচ ৪ ডিভাইস
- চারজিং এডাপটার
- ডাটা কেবল
- হেড ফোন
- ইউজার মেনুয়াল গাইড
- ওয়ারেন্টি কা্র্ড
ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪ সাথে কোন ওটিজি কেবল দেয়া হয়নি কিন্তু এটি ওটিজি সাপোর্টেড তাই এর সাথে সহজেই মাউস, পেনড্রাইভ, কিবোর্ড ব্যবহার করা যায়।
ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি
সম্পূর্ন নতুন আঙ্গিকে এসেছে ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪। যারা মোবাইলের ডিজাইন এবং লুকস্ নিয়ে চিন্তিত আামি মনে করি তাদেরকে মুগ্ধ করবে।
ডিভাইসটি তিনটি ভিন্ন ভিন্ন রংয়ে পাওয়া যাচ্ছে। ব্ল্যাক, স্লিভার আর গোল্ডেন ।
ব্যাক সাইডের কভারটি দেখতে মেটালের মত মনে হতে পারে, এর মেটেল লুকিং প্লাস্টিক কভারটির কারনে ডিজাইনটি আারও বেশি এ্যালিগেন্ট মনে হয়। সাইড গুলো একটু ক্যার্ভ হওয়ায় সহজেই হাতে গ্রীপ পাবেন। এই মোবাইলের ডিসপ্লেতে ব্যবহার করা হয়েছে গরিলা গ্লাস কাজেই কোন প্রকার স্ক্র্যাচ পরার ভয় নাই। মোবাইলটির উপরে আছে নটিফিকেশন লাইট, ফ্রন্ট ফ্ল্যাশ, এয়ার পিস, ফ্রন্ট ক্যামেরা। ব্যাক সাইড উপরের দিকে প্যানেলে ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা এবং ফ্ল্যাস। মোবাইলাটির বামদিকে আছে ভলিউম রকার এবং ডান দিকে পাওয়ার বাটন, উপরের দিকে ৩.৫ মিলিমিটার অডিও জ্যাকপোর্ট এবং ইউএসবি পোর্ট। সবশেষে নিচের দিকে মাইক্রোফোন।
ডিসপ্লে এবং টাচ
ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪ এর ডিসপ্লে তে ব্যবহার করা হয়েছে গরিলা গ্লাস। ফলে মোবাইলে কোন প্রকার র্স্ক্যাচ পরার সম্ভাবনা নেই। ডিভাইসটির স্ক্রীন রেজুলেসন (১২৮০*৭২০) পিক্সেল। আর এছারাও এই মোবাইলে আপনারা ফুল এইচডি (১৯২০*১০৮০) পিক্সেলের ভিডিও দেখতে পারবেন কোন প্রকার ল্যাগিং ছাড়া। এই মোবাইলের টাচ এক কথায় দারুন। আমি স্টক লান্চারে কোন ল্যাগিং পায়নি। আর এই ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪ স্মার্টফোনটির ডিসপ্লেতে ৫ আঙ্গুল পর্যন্ত মাল্টিটাচ সাপোর্ট করে।
ইউজার ইন্টারফেস
ডিভাইসটিতে অ্যান্ড্রয়েড ৫.১ ললিপপ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করায় ইউজার ইন্টারফেসটা একটু নতুনত্ব ধরণের মনে হবে। যথেষ্ট ইউজার ফ্রেন্ডলি আর ব্যবহার করে মজা পাবেন।
ক্যামেরা
ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪ ডিভাইসের রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেলের ব্যাক সাইড ক্যামেরা এবং সাথে আছে এলইডি ফ্ল্যাস। সুতরাং বুঝতেই পারছেন মোবাইলটির ক্যামেরার ছবি মোটামুটি ভালোই আসবে। ফ্রন্ট ক্যামেরা হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে ২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। শুধু এই টুকু নয়। দামী সব অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের মত এই ডিভাইসে রয়েছে ফ্রন্ট সাইড ফ্ল্যাস। সুতারং সেলফি কিংবা ভিডিও কালিং করতে পারবেন কম আলোতে।
ডিভাইসটি দিয়ে তোলা কিছু ছবি দেওয়া হলঃ
পারফরমেন্স
ডিভাইসটিতে অ্যান্ড্রয়েড ৫.১ ললিপপ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। এতে আরও ব্যাবহার করা হয়েছে ১.৩ গিগাহার্টজ কোয়াড কোর প্রসেসর। এতে আছে ৮ গিগাবাইটের রোম রোম আর ১ গিগাবাইটের রোম র্যাম।
গেমিং
আপনারা ইতি মধ্যেই জেনেছেন এই মোবাইলের প্রসেসর ও র্যাম সম্পর্কে। এটা নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি এই মোবাইলটিতে মোটামুটি সব ধরনের গেমসই খেলতে পারবেন তেমন কোন ঝামেলা ছাড়াই। তবে একটু স্লো হতে পারে র্যামের জন্য। বাজেটের কথা মাথাই রেখে এইটুকু সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে হবে।
স্পেশাল ফিচারসঃ
ওয়ালটনের কিছু কিছু ডিভাইসের মত এই ডিভাইসটিতে রয়েছে স্মার্ট জেসচ্যার কন্ট্রোল।
ব্যাটারি ব্যাকাপ
ওয়ালটন প্রিমো এইচ ৪ আছে ২০০০ এমএএইচ এর মিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। টানা ডিসপ্লে অন করে কাজ করলে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ব্যাকআপ পাওয়া যাবে। তবে গেমস, ভিডিও, অথবা নেট ব্যবহার করলে যে কোন মোবাইলই ৪ থেকে ৫ ঘন্টার বেশি চার্জ থাকে বলে আমার মনে হয় না। ব্যাটারি সেভার পাওয়ার অন করে আরও কিছুটা চার্জ বৃদ্ধি করা যায় ।
দাম
এই মোবাইলের দাম ৮,৭৯০টাকা। মোবাইলের কনফিগারেশন অনুযায়ী দাম যথেষ্ট রিজেনেবল।সত্যি বলতে মোবাইলটির লুকস আর কনফিগারেশন দেখে আমি নিজেই অবাক হয়েছি। দামে কম আর ফিচারের জন্যই গ্রাহকদের কাছে এই মোবাইলের চাহিদা অন্যান্য মোবাইলের চেয়ে একটু হলেও বেশি হবে বলে আমি আশা করি।
দূর্বলতা
মাল্টিটাসকিং একটু স্লো হতে পারে র্যামের জন্য কিন্তু বন্ধুরা বাজেটের কথা মাথায় রেখেই বলছি এই বাজেটের মধ্যে একটি ফোনে অনেক ভালো কিছু পাওয়ার পর সামান্য একটু লেকিং মেনে নেয়াই যায়।
সিদ্ধান্ত
আমার একান্ত অভিমত, সীমিত বাজেটের মধ্যে কোন স্মার্টফোন কিনতে চাইলে আমি তাকে অবশ্যই এই মোবাইলটি কিনতে বলবো, কেননা এই দামে এই রকম ফিচার সমৃদ্ধ মোবাইল পাওয়া যাবে খুব কমই।
No comments:
Post a Comment