Sunday 1 November 2015

Walton Primo RX4 Hands On Review - ওয়ালটন প্রিমো হ্যান্ডস অন রিভিউ

Walton Primo RX4 Hands On Review - ওয়ালটন প্রিমো হ্যান্ডস অন রিভিউ

Walton Primo RX4 Hands On Review - ওয়ালটন প্রিমো হ্যান্ডস অন রিভিউ

Walton প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন মোবাইল ফোন বাজারে আনে বলেই Walton ফোনের এতো চাহিদা মানুষের মধ্যে। এই তো বেশ কয়েকমাস আগেই Walton বাজারে নিয়ে আসে Walton Primo RX3. এই মোবাইলটি ব্যপক সাড়া ফেলে ব্যবহারকারীদের মাঝে। আর তাই ইউজারদের আরো নতুনত্বের স্বাদ দিতে Walton আবারো নিয়ে আসলো RX সিরিজের আরো একটি নতুন মডেল Walton RX4. চলুন তাহলে দেরী না করে দেখে নেই এই মোবাইলের এক ঝলক।
ডিসপ্লে: ৫” পিউর ব্লাক আইপিএস এইচ.ডি ডিসপ্লে
স্কিন রেজ্যুলেশন: ১২৮০ x ৭২০ পিক্সেল
সুরক্ষা: সামনে গরিলা গ্লাস ৩, পিছনে ড্রাগন ট্রেইল গ্লাস
অপারেটিং সিস্টেম: ৫.১ ললিপপ
র‌্যাম: ২ জিবি
রম: ১৬ জিবি (৩২ জিবি পর্যন্ত মেমোরি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা)
ক্যামেরা: ১৩ মেগা পিক্সেল রিয়ার, ৫ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট
চিপসেট: MT 6592
সি.পি.ইউ: ১.৪ গিগাহার্জ অক্টাকোর
জি.পি.ইউ: মালি ৪৫০
ও.টি.এ: এনাবেল
ব্যাটারি: ২৫০০ মিলি এম্পিয়ার

মোবাইলের সাথে আপনারা যা যা পাচ্ছেন:

  • ওয়ারেন্টি কার্ড
  • ইউ.এস.বি চার্জার
  • স্ক্রিন প্রটেক্টর
  • ইয়ার ফোন
  • ইউজার গাইড
Screenshot_8

ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি

ডিজাইনের দিক দিয়ে Walton এর নতুন মোবাইল ফোন গুলো একেবারে ইন্টারন্যাশনাল পর্যায় বজায় রাখছে। মেটাল বডি একসময় বাংলাদেশের সহজলভ্য ছিল না। কিন্তু Walton সেই সমস্যা দূর করেছে। নিয়ে আসছে মেটাল বডির মান সম্মত কনফিগের মোবাইল। মেটাল বডির তৈরী এই মোবাইলের ডিসপ্লে-তে ব্যবহার করা হয়েছে গরিলা গ্লাস ৩, যার ফলে মোবাইলে দাগ পড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। শুধু তাই নয়, মোবাইলের পেছনেও ব্যবহার করা হয়েছে ড্রাগন টেইল গ্লাস। যার ফলে মোবাইলের সামনের এবং পিছনের এর লুক ২ দিক থেকেই সমান ভাবে আকর্ষণীয়। সবচেয়ে বড় ব্যপার হচ্ছে বাজেটের মধ্যে আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং একেবারে প্রিমিয়াল লুক নিয়ে হাজির হয়েছে Walton Primo RX4.
মোবাইলটির ডানপাশে  উপরের দিকে রয়েছে ভলিউম বাটন, আর তার ঠিক নিচেই রয়েছে পাওয়ার বাটন। আর মোবাইলের উপরের অংশে রয়েছে ৩.৫ মিলিমিটার অডিও জ্যাক পোর্ট।
Screenshot_6
মোবাইলের বাম পাশে রয়েছে সিম কার্ড স্লট/মেমোরি কার্ড স্লট। এছাড়া মোবাইলের নিচের দিকে রয়েছে মাইক্রো ইউ.এস.বি পোর্ট।
Screenshot_7
মোবাইলের পেছনে রয়েছে ১৩ মেগা পিক্সেল ক্যামেরা সাথে ফ্লাশ। আর ডিসপ্লের ঠিক উপরের দিকে রয়েছে ৫ মেগা পিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। যা সেলফি তোলার জন্য বেষ্ট।
Screenshot_2
মোবাইলটির দৈঘ্য ১৪২.৭ মিলিমিটার, প্রস্থে রয়েছে ৭০.২ মিলিমিটার। এছাড়া এই মোবাইলটির পুরুত্ব মাত্র ৭.৩ মিলিমিটার। আর ব্যাটারি সহ এই মোবাইলটির ওজন মাত্র ১২৯.৭৫ গ্রাম।
Screenshot_9
চলুন এক নজরে এই মোবাইলটি দেখে নেই।
Screenshot_11
Screenshot_1

অপারেটিং সিষ্টেম:

আপনারা এই মোবাইলটিতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে পাচ্ছেন এন্ড্রয়েড এর লেটেস্ট ভার্শন ৫.১ ললিপপ।
Screenshot_2015-09-15-00-09-32

ডিসপ্লে এবং টাচ কোয়ালিটি

Walton Primo RX4 এর ডিসপ্লে তে ব্যবহার করা হয়েছে ৫” পিউর ব্লাক এইচ.ডি আই.পি.এস ডিসপ্লে। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩য় প্রজন্মের গরিলা গ্লাস। এই মোবাইলের রেজুল্যুশন হলো ১২৮০ x ৭২০ পিক্সেল। ডিসপ্লে-তে ৩য় প্রজন্মের গরিলা গ্লাস ব্যবহার করার ফলে মোবাইলে কোন প্রকার ঘষাঘষি বা দাগ লাগার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আর এই মোবাইলে আপনারা ফুল এইচ.ডি (১০৮০x১৯২০পিক্সেল) ভিডিও দেখতে পারবেন কোন প্রকার ল্যাগিং ছাড়া। এছাড়া যে কোন প্রকার এইসডি গেমস খেলার সময় আলাদা রকম এক্সপেরিয়েন্স পাবেন।
এই মোবাইলের টাচ দারুন রেসপন্সিভ।এই মোবাইলের ডিসপ্লেতে ৫ আঙ্গুল পর্যন্ত মাল্টিটাচ সাপোর্ট করে।
Screenshot_2015-09-15-00-44-48

সি.পি.ইউ এবং জি.পি.ইউ

এই মোবাইলে ব্যবহার করা হয়েছে ১.৪ গিগাহার্জ  অক্টাকোর প্রসেসর। কাজেই এই মোবাইলের পারফরমেন্স কেমন হবে সেটা বুঝতেই পারছেন। সকল প্রকার গেমস খেলা যাবে কোন প্রকার ল্যাগিং ছাড়াই। জি.পি.ইউ ব্যবহার করা হয়েছে মালি ৪৫০ এই মোবাইলে ব্যবহার করা হয়েছে মিডিয়াটেক এমটি 6592 এর চিপসেট, যা মিডরেঞ্জ মোবাইলের মধ্যে অসাধারন পারফমেন্স দেবে।
CPU (4)

র‌্যাম এবং রম

এই মোবাইলে রয়েছে ২ জিবি র‌্যাম এবং ১৬ জিবি রম। ২ জিবি র‌্যামের মধ্যে ইউজার এভেইলেবল র‌্যাম পাবেন প্রায় ১.৯৭ জিবি। আর ১৬ জিবি রমের মধ্যে আপনারা ১২.২ জিবি আপনারা ইউনিফাইড স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। আর বাকি যায়গা টুকু মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেম এবং সিস্টেম এ্যপস এ ব্যবহৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজন অনুয়ায়ী মেমোরি কাড ইউজ করার সুবিধা আছে সর্বোচ্চ ৩২ জিবি  পর্যন্ত।
CPU (3)

ইউজার ইন্টারফেস

প্রতিটা ইউজার মোবাইলের বাহ্যিক গঠনের সাথে সাথে এখন মোবাইলের ইউজার ইন্টারফেসের ব্যবপারেও সমান মনোযোগী। মোবাইল কেনার সময় তাই এই বিষয় গুলো মাথায় রাখে ইউজার-রা। Walton এর নতুন এই মোবাইলের ইউজার ইন্টারফেসে আনা হয়েছে নতুনত্ব, Walton এর আগের মোবাইলের সাথে এই মোবাইলের ইউজার ইন্টারফেস যথেস্ট আলাদা এবং চোখে পড়ার মত। এখন সাধারণত ইইজারদের মধ্যে ইউজার ইন্টারফেস নিয়ে খুব বেশি কৈফিয়ত নেই। কেননা প্রতিটা মোবাইলে ফোনেই Walton আলাদা এবং বৈচিত্র আনার চেষ্টা করে প্রতিনিয়ত।    

ক্যামেরা

এই মোবাইলে রয়েছে বিএসআই ১৩ মেগা পিক্সেল রিয়ার অটো ফোকাস ক্যামেরা। এছাড়া সেলফি তোলার জন্য রয়েছে ৫ মেগা পিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। মোবাইলটি দিয়ে আপনারা ১০৮০ পিক্সেল এর ৩০ এফপিএস ভিডিও করতে পারবেন। মোবাইলের ক্যামেরা কোয়ালিটি নিয়ে বেশি কথা বলবো না। ক্যামেরা দিয়ে তোলা কিছু ছবি আমি শেয়ার করবো, আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন এই মোবাইলের ক্যামেরা কোয়ালিটি।
Screenshot_1
Screenshot_2
Screenshot_3
Screenshot_10

সেলফি

Screenshot_3

কানেক্টিভিটি ও সেন্সর

এই মোবাইলের কানেক্টিভিটির মধ্যে রয়েছে Wi-Fi b/g/n , Bluetooth V4, Micro USB V2, Wireless Display Sharing, WLAN Hotspot, OTA Upgrade Enabled
 আর যে সকল সেন্সর রয়েছে তা হলো-
Motion sensors: Accelerometer (3D), Gyroscope, Rotation Vector, Gravity, Linier Acceleration
Environment sensors: Light (Brightness)
Position sensors: Proximity, Orientation & Magnetic field
GPS module: GPS with A-GPS network-assisted GPS navigation function

Screenshot_2015-09-15-00-41-30

Special Feature:

CNC Diamond cut in design
নোটিশিফিকেশন লাইট
উইনিফাইড স্টোরেজ
এন্ড্রয়েড ললিপপ ৫.১

গেমিং পারফরমেন্স

আপনারা ইতি মধ্যেই জেনেছেন এই মোবাইলের প্রসেসর আর র‌্যাম সম্পর্কে। এটা নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি মর্ডান কমব্যাক্ট, ফিফা 15, asphalt 8 সহ সকল প্রকার গেমস কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই খেলতে পারবেন। 

Screenshot_2
Screenshot_6

ব্যাটারি ব্যাকাপ

এই মোবাইলে ব্যবহার করা হয়েছে ২৫০০ মিলি এম্পিয়ার  নন রিমুভেবল ব্যাটারি।  ৫” ডিসপ্লের জন্য এই মোবাইলের ব্যাটারি ব্যাকাপ যথেষ্ট বলে মনে করছি। তবে যদি আপনারা ২৪ ঘন্টা গেমস আর নেট ব্রাউজিং করেন তো ৫০০০ এমএএইস ব্যাটারিও কম মনে হবে। তবে নিয়ন্ত্রিত গেমস আর নেট ব্রাউজিং করলেও খুব সহজেই ২দিন  ব্যাটারি ব্যাকাপ পাবেন। মোবাইল পাতলা করার জন্য এখন অনেক ব্র্যান্ড মোবাইল-ই ধাতবের তৈরী বডি ব্যবহার করছে। যা ফলে ব্যাটারি রাখতে হচ্ছে নন রিমুভাল।

ও.টি.এ.

এই দুটো ফিচার সম্পর্কে আপনার এখন আর বিষদ বর্ণনা দিতে হবেনা মনে হয়। কেননা এই ফিচার গুলো আমার আগের রিভিউ-এর বিস্তারিত আলোচনা করেছি। অনলাইন আপডেট এর জন্য ওটিএ একটি বিশেষ সুবিধা যা বিশ্বের সকল স্মার্টফোনেই রয়েছে।

Anti-theft

এ্যন্টি থেফট সম্পর্কে আমার আগের রিভিউ গুলোতে বলেছি। তবু আপনারা নিচের ভিডিও টি দেখুন। আপনারা স্পষ্ট বুঝতে পারবেন কিভাবে এ্যন্টি থেফট ব্যবহার করতে হবে।

বেঞ্চমার্ক স্কোর:

মোবাইল এখন যতটা স্মার্ট, ইউজার-রা এখন তার চেয়ে বেশি স্মার্ট। ইউজার-রা এখন শুধু ক্যামেরা আর ব্যাটারি-ই খোজেনা, মোবাইলের পারফরমেন্সও দেখে। তাই এখন সকল সচেতন ইউজার-রা মোবাইল কেনার সময় মোবাইলের বেঞ্চমার্ক স্কোর সবার আগে দেখে নেয় বা জেনে নেয়। এই মোবাইলের নেনা মার্ক স্কোর ৫০.৬ এছাড়া এই মোবাইলের আনটুটু স্কোর এসেছে ২৯,৮৭১ যা মোবাইলের দাম এবং কনফিগ অনুযায়ী সুপার্ব।
Bench mark (3)
Bench mark (2)
Bench mark (1)

দাম:

এই মোবাইলের দাম ধার্য করা হয়েছে ১৩,৯৯০ টাকা। মোবাইলের কনফিগারেশন অনুযায়ী দাম যথেষ্ট রিজোনেবল। সবচেয়ে বড় ব্যপার হলো বাজেট বান্ধব ফোন বলে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ একটু চেষ্টা করলেই ফোনটা কিনতে পারবে।

দূর্বলতা

  • মোবাইলের ব্যাটারি নন রিমুভাল।
  • এছাড়া ডিসপ্লের সামনে এবং পেছনে গ্লাস থাকায় মোবাইল একটু সাবাধানে ব্যবহার করা উচিৎ কেননা হাত থেকে পড়ে গেলে মোবাইলের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা অনেক।

সিদ্ধান্ত:

দাম আর ফিচারের কথা যদি আমরা কেউ এখন চিন্তা করি, তাহলে আমার একান্ত অভিমত কেউ চাইলে আমি তাকে অবশ্যই এই মোবাইলটি কিনতে বলবো, কেননা এই দামে এই রকম ফিচার সমৃদ্ধ মোবাইল পাওয়া যাবে খুব কম-ই। তবে আপনাদের সকলের সিদ্ধান্ত-কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে শ্রদ্ধা করি। তবে এটা বলতে পারি, এই মোবা্ইল হাতে নিয়ে দেখলে আর ফিচারের কথা চিন্তা করলে এই বাজেটে এই মোবাইলটি হতে পারে একটি ষ্টাইলিশ মোবাইল। আর এই দামে নন ব্রান্ড মোবাইল ফোন গুলো খুজলেই আপনারা বুঝতে পারবেন আমার কথার সত্যতা।

No comments:

Post a Comment

Next Previous Home